বিয়ে নিয়ে যা বললেন বিতর্কিত তালিকায় থাকা ছাত্রলীগ নেত্রী রুশী!

ছাত্রলীগের সদ্যঘোষিত কমিটি নিয়ে বিতর্ক চলছে। কমিটিতে কেউ বিবিবাহিত আবার কেউ মাদকাসক্ত আবার কেউ জামায়াত পরিবারের সদস্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। পদবঞ্চিত নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী

কার্যক্রমের সাথে জড়িত আছেন অভিযুক্ত করে ১৭ জনের নাম প্রকাশ করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলা হয়।

এদের মধ্যে রয়েছেন উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক পদ পাওয়া ফাতেমা তুজ জোহরা চৌধুরী রুশী। তিনি ফেইসবুকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। জানিয়েছেন তিনি বিবাহিত নন, কেবল বাগদান হয়েছে। কণ্ঠশিল্পী মেহরাবের সঙ্গে তার বাগদান হয়েছে বলে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

ফাতেমা তুজ জোহরা চৌধুরী রুশী : সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চারুকলা অনুষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। আমার আপন বড় ভাই রাজিবুল হক রনি সহকারি অধ্যাপক, সার্জারী ইউনিট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতাল।

সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদ। সাবেক সভাপতি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ। সাবেক সহ-সম্পাদক স্বাচিপ।

বাবা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, এবং ব্যাবসা বাণিজ্য করেন। আমার মা মুক্তিযোদ্ধা বলবো না
কারণ তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য গৃহ ত্যাগ করে যেতে পারেন নাই,তবে গৃহে থেকেই তিনি ছিলেন ১১নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী। তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, তাদের খাবার সরবরাহ করা, অস্ত্র, গ্রেনেড লুকিয়ে রাখা, তা জায়গা মতো আবার পৌঁছে দেয়ার কাজ তিনি করেছেন।

তিনি লেখালেখি করে যাচ্ছেন স্বাধীনতার স্বপক্ষে। আমি একদিন সব লেখা একত্র করে ইনশা-আল্লাহ ছাপাবো। মার সাথে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি সাক্ষাৎ হয় ১৯৬৯ সালে শ্রদ্ধেয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেবের বাসায়। আমার নানুর বাসা আর উনাদের বাসা একদম মুখোমুখি, ময়নসিংহের কলেজ রোডে। (তাহমিদ আলম রিয়াদ এহ্তেশামূল আলম মামা প্রমাণ)

বঙ্গবন্ধুর সাথে মার বেশ কিছু সময় আলাপ হয়েছিল। মা চলে আসার আগে বঙ্গবন্ধু মায়ের মাথায় হাত রেখে দোয়া করে দেন। আমার মায়ের মামাতো ভাই ছিলেন ময়মনসিংহের তৎকালীন চেয়ারম্যান, তারেক আল নুর মামা। (Faramarz Al Nur ভাইয়ার বাবা উনি)

আমার বড় মামা, মেঝ মামা মুক্তিযোদ্ধা। বড় মামার জীবনের অর্ধেক সময় কাটে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম মামার সাথে। মামা সরকারি চাকরি করেন বিধায় পোস্ট নেননি। আমার আপন সেঝ মামা (আজু মামা) ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ডিরেক্টর।

ছাত্র অবস্থায় ময়মনসিংহ কলেজ রোডে অবস্থিত আনন্দ মোহন কলেজের সামনের এবং মুসলিম গার্লস স্কুলের দেওয়ালে মামা বিএনপি, পাক বাহিনী নিয়ে কার্টুন আঁকতেন। তখন ফেইসবুক থাকলে প্রচারণা করা যেতো। যাই হউক। ইয়াহিয়ার বিভৎস চেহারা লকলকে জিভ বের করে হাসছে এমন ছবি সাহস নিয়ে এঁকেছিলেন সেই বিএনপি আমলে।

আমার বড় চাচা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের পুরাটা সময় তিনি একবারের জন্যও পরিবারের সাথে দেখা করতে আসতে পারেন নাই। মেঝ চাচা দেশের বাইরেই জীবন অতিবাহিত করেছেন।

সেঝ চাচা ব্যাবসায়ি। আমি রাজনীতির সাথে জড়িত হয়েছি সরাসরি পরে, কারণ যে নেতার আন্ডারে রাজনীতি করবো, তার প্রতি সম্মান না আসলে পোস্টের খাতিরে তেলানোর স্বভাব আমার ছিল না। পোস্টেড হয়ে ও মিটিং মিছিলে পেছনেই থাকতাম। ধাক্কায় সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই কি মুজিব আদর্শ বেশি বুঝানো যায় নাকি!

আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ। তবে যারা আমার সাথে অশান্তি করে তাদের চিবায় ফেলার সাহস ছোট থেকে বুকে নিয়া চলি। সম্প্রতি আমার বিয়ে হয়েছে এবং হয়েছিল এরকম ভুয়া কিছু কথা ফেইসবুকে দেখি।

আমি আগেই (১৫ মার্চ, আমার জন্মদিনে) ক্লিয়ার করে দিয়েছিলাম যে মেহরাবের সাথে আমার বাগদান হয়েছে। যেহেতু এতো বছরের প্রেম আমাদের আর তা আমি ফেইসবুকে লুকাই ও নাই কোনদিনও। আবার আমাদের বাগদানের ব্যাপারটাও লুকাই নাই। এবারের কমিটিতে আমি উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক পোস্ট পাওয়ার ফলে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে লেগে যায়।

আগের কমিটির এক ছেলে সুস্ময় দে দেখি সে ভুয়া কাবিন নামা বানায় পোস্ট দিলো।
দেখলাম ২০১৩ সালের আমার একটা প্রোফাইল পিকচার কে ক্রপ করে খুবই আনাড়ি হাতে কাজটা করেছে সে এবং পাত্রের ছবিও ব্লার।

এরপর আমার বন্ধু রিয়াদ আমাকে ইনবক্সে পাঠাল সেইম কাবিন নামায় ওই ছেলের বদলে রিয়াদের ছবি জুড়ে দিয়েছে কেউ! মানে আরেকটি জাল বিয়ের হলফ নামা! রিয়াদ আমার ছোট বেলার বন্ধু। এবং খুব ভালো বন্ধু।

আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই আমার তখন কেবল তিন মাস একটা ছেলের সাথে রিলেশন হয়েছিল এবং ছেলেটা নারী এবং মাদকাসক্ত হওয়ায় আমিই তার সাথে ব্রেক আপ করে দেই। ২০১৩ এর পর তার সাথে আমার আর যোগাযোগ হয় নাই। এটা আমার পরিবার বন্ধু-বান্ধব, মেহরাব, তার পরিবার মানে আমার চাচারা সবাই জানেন।

কিন্তু susmoy সেই ছেলের খুব কাছের হওয়ায় তারা আমাকে এটা নিয়ে খোঁচাত। এরপর এই আলাপ দীর্ঘদিনের জন্য শেষ। এরপর এই জাকির ভাই-সোহাগ ভাই কমিটিতে আমি আর সুস্ময় একি সাথে পোষ্ট পেলাম। আমি উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক আর সুস্ময় দে উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক।

এবারের কমিটিতে আমি পোষ্ট পেলাম সুস্ময় পেলো না বলে সে এখন ভুয়া কাগজ বানিয়ে আমাকে হেয় করছে। তার মতে ২০১৪ থেকেই আমি বিবাহিত। তাই হলে সে ২০১৬ সালের কমিটির সময় কিছু না বলে এখন কেন আসছে? তার পেছনে কোন সিন্ডিকেট আছে তা আমার জানা আছে।

আবার বিয়ের হলফনামায় সাধারণত নোটারি পাবলিক করার ক্ষমতা আছে এমন ব্যক্তি বা উকিলের স্বাক্ষর থাকার কথা থাকলেও এখানে তা দেখতে পাওয়া যায়নি। ছাত্রলীগ নেতা সুস্ময় দে’র ফেসবুকে আপলোড করা জাল হলফনামায় বরের নাম সাদা কালিতে ডেকে দিতে দেখা গেছে।

সাধারণ হলফনামায় লাল রংয়ের সিল মোহর ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও সুস্ময় দে’র ফেসবুকে দেওয়া হলফনামায় তা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে আমার আলাপ হয় ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক Shurjo Rahman শান্ত ভাইয়ার সাথে। শান্ত ভাই আমার আপন বড় ভাইয়ের স্কুল জীবনের বন্ধু। শান্ত ভাই ব্যাপারটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আমাকে সর্বাত্বকভাবে সহযোগিতা করবেন বলেন।

এমনি নারীদের রাজনীতি করতে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় যা কেবল নারীরাই জানে। কারণ তাদের আশে পাশে থাকে হাজার সুস্ময়। তারা কেবলই সুবিধাবাদী বা কলঙ্ক লেপন করতে থাকে। সৎভাবে কোন মেয়ে আগালে তা তারা মানতে চায় না। আর এইসব সুস্ময় এর কারণেই সৎ পরিবারের সৎ মেয়েরা রাজনীতিতে আসে ভয় নিয়ে। এবং তারা বার বার বুকে কস্ট চেপে কোনমতে আগায়। অনেকে ঝরে যায় রাজনীতি ঠেকে অনেকে অনেক করেও পিছপা হয় না।

কিন্তু এই কালে হুট করে মেয়েদের পেছনে লাগার জন্য হাজার হাজার সুস্ময় এসে গিয়েছে শুঁকুনের মতো। এরপরেও একজন নারীকে নিয়ে অপপ্রচারের বিচার চাইবো না। সংগঠনের ভাইদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এমনটি হলে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহন কমবে।

এডিট করি একটা ব্যাপার : ভুয়া ছবি প্রথম টা যার তার কে যেন পরিচিত আছে মহিলা সমিতি না কিসে যেন, আমাকে আজ এরকম বলা হয় যে তার অমুকের মা ওখানে বড় পোস্ট পেয়ে আছে আর তারা দাবি করেছে আমি ওখানে কোন কমপ্লেইন করেছি (যা এখনও আমি করি নাই) । কেবল বুঝলাম নতুন ষড়যন্ত্র আবারও আসতে পারে।

লেখক, ফাতেমা তুজ জোহরা চৌধুরী রুশী
উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক
[ফেইসবুক থেকে নেয়া]